মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি চীনা স্টার্টআপ ডিপসিক (DeepSeek) নতুন এআই চ্যাটবটকে মার্কিন প্রযুক্তি শিল্পের জন্য একটি “জাগরণ ঘণ্টা” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ডিপসিকের উদ্ভাবন বিশ্ববাজারে প্রচুর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং মার্কিন প্রযুক্তি খাতের নেতৃত্বের ওপর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
ডিপসিক (DeepSeek) হলো একটি চীনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) কোম্পানি, যা ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের লক্ষ্য হলো কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা (AGI) বাস্তবায়ন করা। ডিপসিকের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেং, যিনি পূর্বে চীনের বৃহত্তম কোয়ান্টিটেটিভ ফান্ড হাই-ফ্লায়ারের সাথে যুক্ত ছিলেন। তাদের লক্ষ্য হলো এআই প্রযুক্তিকে সবার জন্য সহজলভ্য হয়।
গত সপ্তাহে ডিপসিক তাদের নতুন কম খরচে তৈরি এআই চ্যাটবট চালু করেছে। এই অ্যাপটি ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া ফ্রি অ্যাপ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ChatGPT সহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাপিয়ে এটি মার্কিন ব্যবহারকারীদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ডিপসিকের সাফল্যের মূলে রয়েছে এর অল্প খরচে উন্নত প্রযুক্তি, যা মার্কিন এআই আধিপত্য এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
ডিপসিকের উদ্ভাবন ওয়াল স্ট্রিটে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সোমবার মার্কিন বাজার খুলতেই বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ারের মূল্য ব্যাপকভাবে কমে যায়। এনভিডিয়া একাই হারিয়েছে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বাজারমূল্য। মঙ্গলবার জাপানের প্রযুক্তি-কেন্দ্রিক শেয়ারের মূল্যও পতন দেখেছে, যদিও চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানের বাজারগুলো লুনার নিউ ইয়ার ছুটির জন্য বন্ধ ছিল।
ডিপসিক তাদের সাফল্যের মাঝে “বৃহৎ আকারের ম্যালিশাস আক্রমণ” মোকাবিলা করেছে বলে জানিয়েছে। তবুও, এই চ্যালেঞ্জ তাদের জনপ্রিয়তায় কোনো প্রভাব ফেলেনি।
ডিপসিক তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম খরচে এই এআই চ্যাটবট তৈরি করেছে। এর ফলে মার্কিন প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনী কৌশলের ওপর নতুন আলো ফেলেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ঘটনাকে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা প্রযুক্তি শিল্পকে নতুন করে তাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখার কৌশল নির্ধারণে উৎসাহিত করবে।
ডিপসিকের এই অগ্রগতি শুধুমাত্র এআই শিল্প নয়, পুরো প্রযুক্তি জগতে এক নতুন পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে। কম খরচে উন্নত প্রযুক্তি ভবিষ্যতে নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে। মার্কিন প্রযুক্তি খাতের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যা ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনী কৌশল তৈরির প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।