বিশ্ব পরিবেশ দিবস : পরিবেশ সুরক্ষায় জনসচেতনতা ও আইনি কাঠামো যুগোপযোগী করার ওপর গুরুত্ব

বিশ্ব পরিবেশ দিবস

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। বিশ্বের ১৪৩টিরও বেশি দেশে প্রতিবছর এ দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়’ এবং স্লোগান ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’।

 

দিবসটির মূল লক্ষ্য পরিবেশ দূষণের কারণ চিহ্নিত করা, নীতিনির্ধারণে গুরুত্বারোপ, প্রতিরোধমূলক উপায় নির্ধারণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে সক্রিয়তা বাড়ানো। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন র‌্যালি, বৃক্ষরোপণ, আলোচনা সভা ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করছে।

 

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে ৫ জুন সরকারি ছুটি। এ কারণে আগামী ২৫ জুন দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

এদিন বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান, মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা ও পরিবেশ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়াও জাতীয় পরিবেশ পদক, বৃক্ষরোপণ এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পদক প্রদান করবেন।

 

পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পরিবেশ আদালত ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন যুগোপযোগী না হওয়ায় প্রয়োগের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ১৮ কোটি মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি পরিবেশ আদালত। সেখানেও সাধারণ নাগরিক সরাসরি মামলা করতে পারেন না।

 

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স, পাবলিক হেলথ ল’ইয়ার্স নেটওয়ার্ক, বারসিক, ক্যাপস, ওপেন সিসেমিক ফাউন্ডেশন এবং আর্থ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

ব্যারিস্টার নিশাত বলেন, পরিবেশ আদালত আইন বাস্তব প্রয়োগে বহু সীমাবদ্ধতা তৈরি করছে। এই আইন সংশোধন করে সময়োপযোগী ও কার্যকর করা জরুরি, যাতে মানুষ ন্যায্য আইনি প্রতিকার পায়।

 

বক্তারা জানান, পরিবেশ রক্ষায় শুধু আইন সংশোধনই যথেষ্ট নয়। সঙ্গে সামাজিক, রাজনৈতিক, ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিবেচনায় রেখে গবেষণা ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। তাঁদের সুপারিশগুলো হলো, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে প্রশাসনিক জরিমানা আদায়ের ক্ষমতা সংযুক্ত করতে হবে; পরিবেশ রক্ষায় বিশেষায়িত ফোর্স গঠন করতে হবে এবং পরিবেশ আদালত আইনে নাগরিকদের সরাসরি মামলা করার অধিকার দিতে হবে।

 

বিশ্ব পরিবেশ দিবস (ডব্লিউইডি) প্রতি বছর ৫ জুন রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও জনসচেতনতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। ১৯৬৮ সালের ২০ মে জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলকে চিঠি পাঠায় সুইডেন। এরপরই মানব পরিবেশ বিষয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালে স্টকহোমে পরিবেশ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতিসংঘ।